দূরপাল্লার মহাকাশ অভিযানের প্রস্তুতি হিসেবে এক মার্কিন মহাকাশচারী ও তাঁর যমজ ভাইয়ের উপর এক বছর নজর রাখবেন ডাক্তাররা৷ এই পরীক্ষার মাধ্যমে মানুষের শরীর ও মনের ক্ষমতার সীমা বোঝা যাবে বলে আশা করছেন বিজ্ঞানীরা৷
আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশন আইএসএস-এ দুই মহাকাশচারী এক বছর কাটাতে চলেছেন৷ তাঁরা হলেন অ্যামেরিকার স্কট কেলি ও রাশিয়ার মিখাইল করনিয়েংকো৷ আগামী ২৭শে মার্চ তাঁরা রাশিয়ার সোইয়ুজ মহাকাশযানে চেপে আইএসএস-এর উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেবেন৷ ফেরার কথা ২০১৬ সালের মার্চ মাসে৷ এটা কোনো রেকর্ড নয়, কারণ গত শতাব্দীর নব্বইয়ের দশকে রুশ কসমোনট-রা ১৪ মাস পর্যন্ত মহাকাশে থেকেছেন৷ তবে এবার এই অভিযানের উপর অনেক বড় আকারে নজর রাখা হবে৷ এই এক বছর ধরে ডাক্তাররা পৃথিবীতে বসে মহাকাশচারীদের স্বাস্থ্য মনিটর করে যাবেন৷ মঙ্গলগ্রহে মানুষ পাঠানোর প্রস্তুতির জন্য এই তথ্য সংগ্রহ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ৷
কেলি ও করনিয়েংকো এর আগেও অনেকবার মহাকাশে গিয়েছেন, দুজনেই আইএসএস-এ ৬ মাস করে সময় কাটিয়েছেন৷ কেলি বলেছেন, এবারের এই মিশন তাঁর কাছে এক বড় চ্যালেঞ্জ৷ এত দীর্ঘ সময় ধরে মাধ্যাকর্ষণহীনতা ও তেজস্ক্রিয় বিকিরণ সামলানো বেশ কঠিন কাজ হবে বলে তিনি মনে করেন৷ স্কট কেলি-র যমজ ভাই মার্ক-ও এই অভিযানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন৷
এক ভাই থাকবেন মহাকাশে, অন্যজন পৃথিবীতে৷ দুজনের উপরই ডাক্তাররা নজর রাখবেন, ফলাফল তুলনা করবেন৷ মহাকাশ বিজ্ঞানের স্বার্থে একই জিনোমিক কাঠামোর দু’জন মানুষের উপর সমান্তরাল পরীক্ষা এই প্রথম ঘটতে চলেছে৷
বিজ্ঞানের স্বার্থে কেলি ও করনিয়েংকো একটি বছর মহাকাশে কাটাবেন বটে, তবে নিজেদের পরিবার ও পৃথিবীর পরিবেশ থেকে দূরে থাকতে তাঁদের মনে কষ্ট হবে বৈকি৷ তাঁরা এ কথা স্বীকারও করেছেন৷ বৃষ্টি, রোদ, ঘাস – এ সব বড়ই ‘মিস’ করবেন তাঁরা৷ মহাকাশ অভিযানের পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকেই এ সব কথা বলেছেন তাঁরা৷