যোগাযোগ ব্যবস্থা সভ্যতা বিকাশের অগ্রদূত। তাই মানুষ যুগে যুগে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি সাধন করে আসছে নিয়মিত। কয়েক লহমায় নদীকে অতিক্রম করতে মানুষ তৈরি করছে নানা গঠনের সেতু। আকার, আকৃতি, পরিবেশ ও প্রকৃতি এবং ব্যবহারের মাত্রানুযায়ী সেতুতে ব্যবহার করা হয় বিভিন্ন প্রযুক্তি ও কাঁচামাল। এখন শুধু যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে নয়- আনন্দ, আর্কষণ ও পর্যটনের জন্যেও তৈরি হচ্ছে অনেক সেতু। বিভিন্ন রকম এসব সেতুর মধ্যে ঝুলন্ত সেতু অন্যতম। যাকে সাসপেনশন ব্রিজ বলে। দেশে দেশে বিভিন্ন ঝুলন্ত সেতু আছে। এবার চীনে তৈরি হচ্ছে অন্যরকম এক ঝুলন্ত সেতু। সেতুটি কাঁচের। তাও আবার দুটি পাহাড়ের মাঝে। এজন্যেই এ সেতু নিয়ে বিশ্বজুড়ে আগ্রহ জন্মেছে। বলা হচ্ছে, চীনের সব অর্জনের সঙ্গে নতুন এক মাত্রা যোগ করতে যাচ্ছে এই ঝুলন্ত সেতু। একে অন্যতম অর্জন বলার কারণ এ সেতুটি আর সব সেতুর মতো নয়। এর সঙ্গে যুক্ত অনেকগুলো বিশেষণ। কাঁচের তৈরি ঝুলন্ত সেতু হিসেবে এটি প্রথম স্থাপনা। উচ্চতার দিক থেকে এ সেতু সর্বোচ্চ এবং বিশ্বের দীর্ঘতম কাঁচের সেতু। চীনের হুনান প্রদেশের ঝাংজিয়াজে রয়েছে বিশাল এক চিত্তাকর্ষক ন্যাশনাল পার্ক- ঝাংজিয়াজ ন্যাশনাল ফরেস্ট পার্ক। এ পার্কের অপূর্ব ও বৈচিত্রপূর্ণ প্রকৃতি বিশ্বখ্যাত। তাই প্রচুর পর্যটকের আনাগোনা আছে এখানে। এখানকার পাহাড় ও পাহাড়ের গায়ে লেগে থাকা সবুজ গাছপালা বিখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক জেমস ক্যামেরুনের চোখে পড়ে যায়। তিনি তার ২০০৯ সালের বিখ্যাত চলচিত্র ‘?এভাটার’-এ এখানকার প্রকৃতিকে উপস্থাপন করেছেন। বিশেষ করে চলচ্চিত্রে দেখানো এখানকার একটি পাহাড়ের পূর্ব নামের সঙ্গে এভাটার লাগিয়ে বর্তমান নাম ‘এভাটার হ্যালেলুজাহ’ পাহাড় রাখা হয়েছে। ঝাংজিয়াজে ন্যাশনাল পার্কের এমন দুটো পাহাড়ের চূড়ার সঙ্গে মেলবন্ধ তৈরি করেছে এ সেতু। এবছর জুলাই মাসে পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু এবং দীর্ঘতম কাঁচের সেতুটি উদ্বোধন করার কথা রয়েছে। এ সেতুর দৈর্ঘ্য ১৪১০ ফুট আর প্রস্থ প্রায় ২০ ফুট। দুটি পাহাড়ের মাঝখানে তৈরি এ সেতুটি ঝুলছে ঠিক ৯৮৪.২৫ ফুট উঁচুতে। তাই উদ্বোধনের পর এটিই হবে বিশ্বের দীর্ঘতম ও সবচেয়ে উঁচু কাঁচের সেতু। কারণ এ সেতুটির সঙ্গে পৃথিবীর অন্যান্য সেতুর তুলনা করলে দেখা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন স্কাইলাইন সেতুটি ৬৯ ফুট দীর্ঘ এবং সেতুটি গভীর খাঁদ থেকে ৭১৮.৫০ ফুট উঁচুতে অবস্থিত। এরপর কানাডার গ্লাসিয়ার স্কাইলাইনের কথা বলা যাক। এ সেতুটি আলবার্টায় অবস্থিত। গত বছর উদ্বোধন করা এ সেতু পাহাড় থেকে ৯১৮ ফুট উঁচুতে অবস্থিত, যা ১১৫ ফুট দীর্ঘ মাত্র। ঝাংজিয়াজের সাসপেনশন সেতুটি সর্বোচ্চ উচ্চতায় হওয়ার কারণে এটি হতে পারে পৃথিবীর সর্বোচ্চ উচ্চতার বাংগি জাম্পের স্থান। কেননা বর্তমানের সর্বোচ্চ উচ্চতার ম্যাকাও টাওয়ারের ৭৬৪ ফুট উচ্চতার বাংগি জাম্পকে এটি ছিনিয়ে নেবে। কাঁচের এ পদব্রিজটির প্রকৌশলী প্রধান হলেন ইসরায়েলের স্থপতি হাইম দোটান। তিনি কাঁচের সেতুটি সম্পর্কে বলেছেন, ‘ফ্যাশন শো-এর জন্যে সেতুটি ব্যবহৃত হবে। চারপশের সবুজ-নীলাভ প্রাকৃতিক পরিবেশ ও ঝলমলে আলো ক্যামেরায় ছবি ধারণের খুব উপযোগী।’ তিনি আরও জানান, একই সময়ে এ সেতুটি ৮০০ মানুষ ধারণ করার ক্ষমতা রাখে। এ সেতুতে উঠলে পর্যটক দেখতে পাবেন তার পায়ের নিচে কাঁচ চকচক করছে। সেখানে নিচের উপত্যকার সব চিত্র স্পষ্ট হয়ে উঠবে। যেন হাওয়ায় হাঁটছে মানুষ। বিখ্যাত এভাটার চলচ্চিত্রের চরিত্রগুলো হয়ত নিচের পাহাড়ি ঢালে জীবনযাপন করছে। অত উঁচুতে স্বচ্ছ কাঁচের ওপর দিয়ে হেঁটে যাওয়া নিশ্চয় এক অন্যরকম অনুভূতির জন্ম দেবে পর্যটককে। তবে উচ্চতাভীতি আছে এমন মানুষকে এ সেতুতে না ওঠার কথা বলছেন এ নির্মাতা।
কাঁচের ঝুলন্ত সেতু সবচেয়ে বড় ও উঁচু
যোগাযোগ ব্যবস্থা সভ্যতা বিকাশের অগ্রদূত। তাই মানুষ যুগে যুগে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি সাধন করে আসছে নিয়মিত। কয়েক লহমায় নদীকে অতিক্রম করতে মানুষ তৈরি করছে নানা গঠনের সেতু। আকার, আকৃতি, পরিবেশ ও প্রকৃতি এবং ব্যবহারের মাত্রানুযায়ী সেতুতে ব্যবহার করা হয় বিভিন্ন প্রযুক্তি ও কাঁচামাল। এখন শুধু যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে নয়- আনন্দ, আর্কষণ ও পর্যটনের জন্যেও তৈরি হচ্ছে অনেক সেতু। বিভিন্ন রকম এসব সেতুর মধ্যে ঝুলন্ত সেতু অন্যতম। যাকে সাসপেনশন ব্রিজ বলে। দেশে দেশে বিভিন্ন ঝুলন্ত সেতু আছে। এবার চীনে তৈরি হচ্ছে অন্যরকম এক ঝুলন্ত সেতু। সেতুটি কাঁচের। তাও আবার দুটি পাহাড়ের মাঝে। এজন্যেই এ সেতু নিয়ে বিশ্বজুড়ে আগ্রহ জন্মেছে। বলা হচ্ছে, চীনের সব অর্জনের সঙ্গে নতুন এক মাত্রা যোগ করতে যাচ্ছে এই ঝুলন্ত সেতু। একে অন্যতম অর্জন বলার কারণ এ সেতুটি আর সব সেতুর মতো নয়। এর সঙ্গে যুক্ত অনেকগুলো বিশেষণ। কাঁচের তৈরি ঝুলন্ত সেতু হিসেবে এটি প্রথম স্থাপনা। উচ্চতার দিক থেকে এ সেতু সর্বোচ্চ এবং বিশ্বের দীর্ঘতম কাঁচের সেতু। চীনের হুনান প্রদেশের ঝাংজিয়াজে রয়েছে বিশাল এক চিত্তাকর্ষক ন্যাশনাল পার্ক- ঝাংজিয়াজ ন্যাশনাল ফরেস্ট পার্ক। এ পার্কের অপূর্ব ও বৈচিত্রপূর্ণ প্রকৃতি বিশ্বখ্যাত। তাই প্রচুর পর্যটকের আনাগোনা আছে এখানে। এখানকার পাহাড় ও পাহাড়ের গায়ে লেগে থাকা সবুজ গাছপালা বিখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক জেমস ক্যামেরুনের চোখে পড়ে যায়। তিনি তার ২০০৯ সালের বিখ্যাত চলচিত্র ‘?এভাটার’-এ এখানকার প্রকৃতিকে উপস্থাপন করেছেন। বিশেষ করে চলচ্চিত্রে দেখানো এখানকার একটি পাহাড়ের পূর্ব নামের সঙ্গে এভাটার লাগিয়ে বর্তমান নাম ‘এভাটার হ্যালেলুজাহ’ পাহাড় রাখা হয়েছে। ঝাংজিয়াজে ন্যাশনাল পার্কের এমন দুটো পাহাড়ের চূড়ার সঙ্গে মেলবন্ধ তৈরি করেছে এ সেতু। এবছর জুলাই মাসে পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু এবং দীর্ঘতম কাঁচের সেতুটি উদ্বোধন করার কথা রয়েছে। এ সেতুর দৈর্ঘ্য ১৪১০ ফুট আর প্রস্থ প্রায় ২০ ফুট। দুটি পাহাড়ের মাঝখানে তৈরি এ সেতুটি ঝুলছে ঠিক ৯৮৪.২৫ ফুট উঁচুতে। তাই উদ্বোধনের পর এটিই হবে বিশ্বের দীর্ঘতম ও সবচেয়ে উঁচু কাঁচের সেতু। কারণ এ সেতুটির সঙ্গে পৃথিবীর অন্যান্য সেতুর তুলনা করলে দেখা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন স্কাইলাইন সেতুটি ৬৯ ফুট দীর্ঘ এবং সেতুটি গভীর খাঁদ থেকে ৭১৮.৫০ ফুট উঁচুতে অবস্থিত। এরপর কানাডার গ্লাসিয়ার স্কাইলাইনের কথা বলা যাক। এ সেতুটি আলবার্টায় অবস্থিত। গত বছর উদ্বোধন করা এ সেতু পাহাড় থেকে ৯১৮ ফুট উঁচুতে অবস্থিত, যা ১১৫ ফুট দীর্ঘ মাত্র। ঝাংজিয়াজের সাসপেনশন সেতুটি সর্বোচ্চ উচ্চতায় হওয়ার কারণে এটি হতে পারে পৃথিবীর সর্বোচ্চ উচ্চতার বাংগি জাম্পের স্থান। কেননা বর্তমানের সর্বোচ্চ উচ্চতার ম্যাকাও টাওয়ারের ৭৬৪ ফুট উচ্চতার বাংগি জাম্পকে এটি ছিনিয়ে নেবে। কাঁচের এ পদব্রিজটির প্রকৌশলী প্রধান হলেন ইসরায়েলের স্থপতি হাইম দোটান। তিনি কাঁচের সেতুটি সম্পর্কে বলেছেন, ‘ফ্যাশন শো-এর জন্যে সেতুটি ব্যবহৃত হবে। চারপশের সবুজ-নীলাভ প্রাকৃতিক পরিবেশ ও ঝলমলে আলো ক্যামেরায় ছবি ধারণের খুব উপযোগী।’ তিনি আরও জানান, একই সময়ে এ সেতুটি ৮০০ মানুষ ধারণ করার ক্ষমতা রাখে। এ সেতুতে উঠলে পর্যটক দেখতে পাবেন তার পায়ের নিচে কাঁচ চকচক করছে। সেখানে নিচের উপত্যকার সব চিত্র স্পষ্ট হয়ে উঠবে। যেন হাওয়ায় হাঁটছে মানুষ। বিখ্যাত এভাটার চলচ্চিত্রের চরিত্রগুলো হয়ত নিচের পাহাড়ি ঢালে জীবনযাপন করছে। অত উঁচুতে স্বচ্ছ কাঁচের ওপর দিয়ে হেঁটে যাওয়া নিশ্চয় এক অন্যরকম অনুভূতির জন্ম দেবে পর্যটককে। তবে উচ্চতাভীতি আছে এমন মানুষকে এ সেতুতে না ওঠার কথা বলছেন এ নির্মাতা।
RELATED ARTICLES