বিশ্বের সবচেয়ে বড় জাহাজের নাম জিজ্ঞাসা করলে এখনও অনেকে ‘টাইটানিক’-এর নামই বলবেন। কিন্তু টাইটানিকের চেয়েও অনেক বড় জাহাজ এখন ইউরোপে আছে। চারটা ফুটবল মাঠের চেয়েও বড় এই জাহাজের নাম ‘ওয়েসিস অফ দ্য সিস’। খোদ ৫টা টাইটানিক জাহাজ ঢুকে যাবে এই ‘ওয়েসিস অফ দ্য সিস’-এর ভেতরে!
‘ওয়েসিস অফ দ্য সিস’-এর বাংলা অর্থ ‘সমুদ্রের বুকে এক টুকরো মরুদ্যান’। উইকিপিডিয়ার তথ্যনুযায়ী বর্তমানে জাহাজটির মালিকানা রয়েছে রয়্যাল ক্যারিবিয়ান ইন্টারন্যাশনালের কাছে। এই পাহাড়সম জাহাজটি বানিয়েছে ‘এসটিএক্স ইউরোপ’। নির্মাণে খরচ হয়েছে ১.৫ বিলিয়ন ডলার। ২০০৭ সালের ১২ নভেম্বরে জাহাজটির নির্মাণকাজ শুরু হওয়ার সাড়ে তিন বছর পর ২০০৯ সালের ১ নভেম্বর এটি প্রথম সাগরে গা ভাসায়।
একসঙ্গে ৬ হাজার ৩০০ যাত্রী বহন করতে পারা ‘ওয়েসিস অফ দ্য সিস’-এর ওজন দুই লাখ ২৫ হাজার ২৮২ টন। দৈর্ঘ্যে ১১৮৭ ফুট এবং প্রস্থে ২০৮ ফুট ‘ওয়েসিস অফ দ্য সিস’-এর প্রায় ৩০ ফুট কাঠামোই পানির নীচে থাকে। ২২ তলাবিশিষ্ট বিলাসবহুল এই জাহাজটিতে রয়েছে ১৬টি ডেক এবং ২ হাজার ৭০০টি বিলাসবহুল রুম।
মোট ৭ ভাগে বিভক্ত ‘ওয়েসিস অফ দ্য সিস’-এ রয়েছে বিনোদন কেন্দ্র, সেন্ট্রাল পার্ক, পুল, ফিটনেস সেন্টার। বিশ্বের প্রথম ভাসমান উদ্যান এই ‘ওয়েসিস অফ দ্য সিস’-য়েই রয়েছে। যে উদ্যানে আছে ১২ হাজার গাছের চারা এবং ৫৬টি গাছ। জাহাজের পেছনে আছে ৭৫০টি আসনবিশিষ্ট থিয়েটার। এই থিয়েটারটিই আবার দিনে সুইমিং পুল হিসেবে ব্যবহৃত হয়। রাতে সাগরের বুকে ভাসমান থিয়েটার।
জাহাজটিতে আছে সার্ফিংয়ের সুব্যবস্থা। আছে গ্লাইডিং করে ওড়ার ব্যবস্থাও। জাহাজের ছাদে কমপক্ষে ২৫ মিটার ওপর পর্যন্ত ওড়া যাবে গ্লাইডিংয়ের মাধ্যমে। পর্বতারোহণে আগ্রহীদের জন্য আছে পাথরের দেয়াল।
জাহাজে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে অসংখ্য পানশালা, পোশাক ও বিভিন্ন দ্রব্যের দোকান ও রেস্তোরাঁ। সাথে আছে বাস্কেটবল কোর্ট, ভলিবল কোর্ট, চারটি বিশালাকৃতির সুইমিং পুল এবং শিশুদের জন্য বিশেষ নার্সারি ও খেলাধূলার জায়গা। এছাড়া আছে ইয়থ জোন, যেখানে পাওয়া যাবে কম্পিউটার গেমিং ও গবেষণাগারসহ থিম পার্কের সব রকম সুবিধা।
অত্যাধুনিক এই জাহাজে করে ঘুরে বেড়াতে চাইলে কেবিন ভাড়া বাবদ প্রতিদিন কমসেকম ১৪৫৮ ডলার খরচ করতে হবে আপনাকে। আর যদি সমুদ্রের দিকে মুখ করা দোতলা সুইট ভাড়া নিতে চান তাহলে আর একটু বেশি গুণতে হবে। মাত্র ৩২০০ ডলার। আর বুকিং? সেটা দিতে হবে অন্তত দুই বছর আগে!