Thursday, November 21, 2024
Homeসৌন্দর্য পরামর্শপ্রাকৃতিক ভাবে ঘন চুল পেতে

প্রাকৃতিক ভাবে ঘন চুল পেতে

দূষণ, ক্ষতিকর কেমিকেলের ব্যবহার, ঘন ঘন আয়রন করা, ড্রাইয়ার এর অতিরিক্ত ব্যবহার এর কারণে চুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে, পাতলা হয়ে যায়, হয়ে পড়ে নিষ্প্রাণ, নির্জীব। অনেকেই চুল পড়ে যাওয়া থেকে রক্ষা পেতে নানা রকম হেয়ার ট্রিটমেন্ট করেন। এর কোনটিই দীর্ঘস্থায়ী হয়না কারণ এতে প্রাকৃতিক উপাদানের পরিবর্তে ব্যবহার করা হয় কেমিকেল। ব্যয়বহুল ট্রিটমেন্টের চেয়ে বাড়িতে বসেই প্রাকৃতিক ভাবে পাতলা চুল ঘন করার জন্য নিচের টিপস গুলো দারুন কাজে আসবে।

• তেলঃ

চুলের যত্নে সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করা হয় তেল। আর এই তেল-ই হতে পারে আপনার চুল ঘন করার জন্য সবচেয়ে সহজ উপায়। চুলের তেল বলতে সাধারণত সবাই নারিকেল তেল কে বুঝে থাকেন। তবে চুল ঘন করার এবং যাদের চুল পড়ে যাচ্ছে তারা এই তেলের মিশ্রণ ব্যবহার করলে ভালো ফল পাবেন। আমাদের দেশে এই তেল গুলো সবচেয়ে সহজলভ্য –

০১. আমণ্ড অয়েল ও ক্যাস্টর অয়েল

০২. তিলের তেল ও সরিষার তেল

০৩. অলিভ অয়েল ও ক্যাস্টর অয়েল

রাতে ঘুমানোর আগে এই তেলের মিশ্রণ হালকা গরম করে নিয়ে মাথার তালুতে ভালো ভাবে ম্যাসাজ করে নিতে হবে। চুলের প্রতিটি গোড়ায় যেন তেল পৌঁছায় সেজন্য একটু সময় নিয়ে আস্তে আস্তে পুরো চুল আর তালুতে তেল দিয়ে নিতে হবে। সারা রাত রাখা সম্ভব না হলে গোসলের ১ ঘণ্টা আগে চুলে তেল দিয়ে তারপর শ্যাম্পু করে নিতে হবে। সপ্তাহে ২ বার যদি এটা করা যায়, ১ মাসের মধ্যেই চুল পাতলা ভাব কমে আসবে, চুল পড়া বন্ধ করে নতুন চুল গজাতে সাহায্য করবে।

• ডিমঃ

সবচেয়ে সহজতর এবং কম সময়ে ফল পাবার জন্য ডিম হতে পারে আপনার চুল ঘন করার উপাদান। ডিম হচ্ছে প্রাকৃতিক প্রোটিন, যা চুলকে ঘন করতে সাহায্য করে। এর ভিটামিন চুলের গোড়ায় পৌঁছে পুষ্টি যোগায়, চুলের স্বাস্থ্য ফিরিয়ে দিতে চমৎকার কাজ করে। একটি ডিমের সাদা অংশ নিয়ে ভালো ভাবে ফেটিয়ে নিতে হবে। তারপর পরিষ্কার চুলে সরাসরি হাত অথবা ব্রাশের সাহায্যে ওপর থেকে নিচ পর্যন্ত লাগাতে হবে। ডিম দিতে গেলে অনেকে চুল জট বেঁধে এলোমেলো হয়ে যায় বলে এড়িয়ে যান। চুলে ডিমের সাদা অংশ লাগানোর পর একটি মোটা দাঁতের চিরুনির সাহায্যে সাবধানে চুল আঁচড়ে নিন। তারপর হালকা ঝুটি করে নিন বা শাওয়ার ক্যাপ পরে নিন। ২০-৩০ মিনিট রেখে নরমাল পানিতে চুল ধুয়ে নিন এবং শ্যাম্পু করুন। যেদিন ডিম দেবেন সেদিন আর আলাদা করে কন্ডিশনার দেবার প্রয়োজন হবেনা। প্রতি ৭ দিনে ১ বার করুন দেখবেন চুল ঘন হওয়ার সাথে সাথে আসবে বাউন্স।

• জেলাটিনঃ

সাধারণত জেলি তৈরির কাজে ব্যবহার করা হয়। তবে চুল ঘন করার জন্য এটি বেশ কার্যকর। বাজারে সাধারণত ২ রকম জেলাটিন পাওয়া যায়, ফ্লেভার সহ এবং ফ্লেভার ছাড়া। তবে চুলের জন্য ফ্লেভার ছাড়া জেলাটিন ব্যবহার করাই ভালো হবে। জেলাটিন ব্যবহার করতে পারেন দুভাবে। শ্যাম্পুর সাথে মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন, অথবা আলাদাভাবে প্যাক হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। গরম পানিতে জেলাটিন নরম করে নিন, এরপর আপনার শ্যাম্পুর সাথে মিশিয়ে ফেলুন। প্রতিবার শ্যাম্পু করার পূর্বে বোতল ভালো ভাবে ঝাকিয়ে নিন। তারপর ব্যবহার করুন। এতে চুল কিছুটা হলেও ঘন দেখাবে। প্যাক হিসেবে ব্যবহার করার জন্য গরম পানিতে জেলাটিন দিয়ে তা ধীরে ধীরে নেড়ে মিশিয়ে নিন, তারপর চুলে লাগান। জেলাটিন আপনার চুলের ক্ষতিগ্রস্ত strand গুলোকে ভরাট করতে সাহায্য করবে এবং নিয়মিত ব্যবহার আপনার চুলকে ঘন দেখাবে।

• অ্যালোভেরাঃ

অ্যালোভেরার জেল বের করে নিন, ৪ চামচ মধুর সাথে মিক্স করে সরাসরি চুলে এবং মাথার তালুতে লাগিয়ে ফেলুন। চাইলে এর সাথে কোনও ট্রিটমেন্ট ক্রিমও যোগ করতে পারেন। চুল ঘন করার সাথে সাথে এটি আপনার চুলের আগা ফেটে যাওয়া রোধ করবে।

• মধুঃ

মধু আপনার চুলের পুষ্টির একটি মূল্যবান উৎস। চাইলে শুধু মধুও ব্যবহার করতে পারেন। মাথার ত্বকের জন্য খুব ভালো ময়েশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে মধু। তবে চুলে ব্যবহারের ক্ষেত্রে মধু খুবই আঠালো, সে জন্য খুব অল্প পরিমাণে (৪-৫ চামচ এর বেশি না) মধু নিয়ে তা মাথার তালুতে ব্যবহার করুন। তারপর চুল আটকে ১৫ মিনিট রেখে দিন। খেয়াল রাখুন যেন প্রতিটি চুলের গোড়ায় একটু হলেও মধু পৌঁছায়। সবশেষে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। মধু, ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থ সরবরাহ আপনার চুল revitalizing এবং প্রতিটি Strand শক্তিশালী করতে সাহায্য করে। যা চুলকে ঘন এবং বাউন্সি করে।

• পেঁয়াজঃ

যেসব জায়গায় চুল বেশি পাতলা, পেঁয়াজ কেটে ঘষলে সেই অঞ্চলের blood circulation বাড়ে, ফলে তা নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। আপনার হেয়ার ফলিকল এর কোনও অংশ ক্ষতিগ্রস্ত থাকলে নিয়মিত ব্যবহারে তা সারিয়ে তোলে। যাদের চুল পাতলা তারা সপ্তাহে ২-৩ দিন ১০-১২ মিনিটের জন্য মাথার তালুতে পেঁয়াজ ঘষে ব্যবহার করলে কিছুদিনের মধ্যেই ফল পাবেন।

• ক্যাপসিকামঃ

শুনতে কিছুটা অন্যরকম মনে হলেও ক্যাপসিকাম চুল ঘন করার জন্য খুবই কার্যকর। ফুটন্ত পানিতে একটি ক্যাপসিকাম ছেড়ে দিন, ৭ মিনিটের জন্য। এরপর ১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন পানিটি ঠাণ্ডা হবার জন্য। চুল শ্যাম্পু করার পর এই টনিকের মতো মাথায় ম্যাসাজ করে ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। ফলাফল পাবার জন্য এই প্রক্রিয়াটি নিয়মিত করতে হবে সপ্তাহে ২ দিন। ১ মাস এর মধ্যে চুল এর পাতলা ভাব অনেকটাই কমে আসবে।

RELATED ARTICLES

আজকের দিনের জনপ্রিয়