দিনে দিনে টেকো মাথার মানুষের সংখ্যা বেড়েই যাচ্ছে। জীবনযাপন পদ্ধতির পরিবর্তন, খাদ্যাভাস, পরিবেশ দূষণ নানা কারণে চুল পড়া সমস্যা তৈরি হতে পারে। কর্মব্যস্ত পুরুষদের উচিৎ সবসময় শরীরের পাশাপাশি চুলগুলোরও যত্ন নেওয়া। কারণ পুরুষদের অনেক সময় ধরে বাইরে থাকতে হয় এবং বাইরের ধুলো-বালি, রোদ চুলের অনেক ক্ষতি করে। সঠিক যত্নের অভাবে চুল পড়তে শুরু করে। তাই শত ব্যস্ততার ফাঁকে সময় করে হলেও চুলের যত্ন নেওয়া খুব প্রয়োজন। জেনে নিন পুরুষের চুল পড়া রোধে যে ৬টি যত্ন জরুরি:
১। সপ্তাহে একদিন গরম খাঁটি নারিকেল তেলের সাথে ভিটামিন “ই” ক্যাপসুল মিশিয়ে চুলে ম্যাসেজ করতে পারেন। (ক্যাপসুল ফুটো করে ভেতরের নির্যাস বের করে নেবেন)
২। চায়ের লিকার খুব ভালো কন্ডিশনারের কাজ করে। পরিষ্কার পানিতে চা ফুটিয়ে ছেঁকে নিয়ে তা ব্যবহার করুন শ্যাম্পু করার পর। ১০-১৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন।
৩। মাসে ২ বার ডিমের সাথে লেবুর রস মিশিয়ে মাথায় ৩০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। এতে চুল হবে সুন্দর ও মসৃণ।
৪। চুল যেমনই হোক তেল ম্যাসেজ চুলের জন্য খুব উপকারী। সপ্তাহে ২ দিন তেল ম্যাসেজ করে, একটি তোয়ালে গরম পানিতে ভিজিয়ে চিপে পানি ফেলে নিন তারপর মাথায় গরম তোয়ালে পেঁচিয়ে রাখুন।
৫। আপনার ব্যবহার করা চিরুনি অন্যকে ব্যবহার করতে দেবেন না। চিরুনি সবসময় পরিষ্কার রাখুন।
৬। হেয়ার স্প্রে, জেল খুব বেশি ব্যবহার না করাই ভালো।
ত্বকের সঙ্গে সঙ্গে নিয়মিত চুলের যত্ন নেয়া জরুরি। দৈনিক কিছু চুল স্বাভাবিকভাবে পড়ে যায় এবং একইভাবে কিছু চুল গজায়। চুল পড়ার জন্য ডিএইচটি হরমোন দায়ী।
পুরুষদের চুল সামনের দিকে পড়ে টাকে পরিণত হয় এবং মহিলাদের পুরো মাথার চুলই এককভাবে পড়ে এবং পাতলা হয়ে যায়। চুল পড়ার রাসায়নিক কারণ খুবই জটিল।
সচরাচর নারীদের চুলের সমস্যা ও যত্ম নিয়ে কথা হলেও পুরুষদের সমস্যা নিয়ে খুব একটা কথা বলা হয় না। সেক্ষেত্রে অনেকে মনে করেন উভয়ের সমস্যা ও যত্মের ধরন বুঝি একই।
মোটেও একই নয়। নিচে পুরুষদের চুলের সাধারণ তিনটি সমস্যা নিয়ে কথা বলা হলো-
পাতলা চুল :
চুল পাতলা হয়ে যাওয়া একটি গুরুতর সমস্যা। পাতলা চুলের উপযোগী আঁচড়ানোর কৌশল বেছে নিন। এই ক্ষেত্রে চুল ছোট করে কাটতে পারেন। এতে চুল পড়া কমে। পুরুষদের চুল সাধারণত বাইরের ধুলো-ময়লা, বায়ুদূষণ ও রোদের শিকার হয় বেশি। তাই চুলের স্বাস্থ্য বুঝে ভালো ব্র্যান্ডের শ্যাম্পু বেছে নিন।
খুশকি :
খুশকি একটি বড় ধরনের সমস্যা। এর জন্য সঠিকভাবে চুলের যত্ম না নেওয়া দায়ী। অতিযত্মও দায়ী হতে পারে। তাই চুলের যত্মে ভারসাম্য আনুন। চুলে নিয়মিত তেল দিন। নিশ্চিত হন অতিরিক্ত তেল ব্যবহার করছেন না। কারণ তৈলাক্ত মাথার ত্বক হতে পারে খুশকির উৎস। এর সঙ্গে সুষম খাদ্য গ্রহণের সম্পর্ক রয়েছে। তাই প্রয়োজনে খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনুন।
চুল পড়া :
চুল পড়া একটি স্বাভাবিক বিষয়। কিন্তু অতিরিক্ত চুল পড়া স্বাভাবিক নয়। এর পেছনে কারণ হিসেবে সাধারণত থাকে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে জীবনযাপন, ধূমপান ও দূষণ। এ ছাড়া চুলের প্রতি উদাসীনতা হতে পারে চুল পড়ার অন্যতম কারণ। এক্ষেত্রে স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন, সঠিক খাবার বাছাই ও ধূমপান ত্যাগ আপনাকে সাহায্য করবে।
চুল পড়ার অন্যান্য কারণ
*ইনফেকশনজনিত যেমন-ব্যাকটেরিয়াঃ পায়োজেনিক, টিউবারকুলসিস; ফ্যাঙ্গাসঃ কেরিওন ভাইরাসঃ হারপিস ইনফেকশন; প্রোটোজোয়ারঃ লিশমেনিয়া।
* শারীরিক ইনজুরিঃ কেমিক্যাল, পুড়ে যাওয়া।
* মাথার ত্বকের রোগ যেমন-লুপার ইরায়থমেটাস লাইকেন প্লানাস।
* এছাড়া যেসব পরিবার অ্যাজমা, থাইরয়েড রোগ, শ্বেতী, রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, প্যারনেসিয়াস অ্যানিমিয়া রোগে আক্রান্ত সেসব পরিবারের লোকজনের মধ্যে এ রোগ দেখা দিতে পারে।
* বিভিন্ন রকম ওষুধ যেমন প্রেসারের ওষুধ, ক্যানসারের ওষুধ, জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি ইত্যাদি।
* মানসিক দুশ্চিন্তা।