সকালের নাশতা রাজার মতো, আর রাতের খাবার প্রজার মতো, এমন প্রবাদ বাংলা ভাষায় এখন বেশ পরিচিত। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন খাদ্যাভ্যাসই ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ভালো। অর্থাৎ সকালের নাশতা হতে হবে পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ আর রাতের খাবার হতে হবে এর ঠিক উল্টো।
এমন খাদ্যাভ্যাস শরীরের ক্ষতিকর শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। টেল এভিভ ইউনিভার্সিটির নতুন একটি গবেষণায় এই ফলাফল পাওয়া গেছে। ভারতের ওয়েবসাইট এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে প্রকাশ হয়েছে এই তথ্য।
বর্তমানে সারা বিশ্বে ৩০ হাজার ৮২ কোটি লোক ডায়াবেটিস রোগে ভুগছে; বিশেষত টাইপ-২ ডায়াবেটিসে। গবেষকরা বলছেন, এই গবেষণায় একটি নতুন পথের সন্ধান মিলল।
গবেষক অধ্যাপক দানিয়েলা জ্যাকোবিচ জানান, শরীর সকালের খাবার থেকে কম ক্যালরি নেয়। তাই সকালের নাশতায় বেশি ক্যালরি গ্রহণ এবং রাতের খাবারে কম ক্যালরি গ্রহণ দেহের প্রতিদিনের শর্করার পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে।
গবেষণাটি করা হয় টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ৩০ থেকে ৭০ বছরের আটজন পুরুষ ও ১০ জন নারীর মধ্যে। রোগীদের ‘বি’ এবং ‘ডি’ এই দুই ধরনের খাদ্যতালিকা (ডায়েট চার্ট) অনুসরণ করতে বলা হয়।
বি’ খাদ্যতালিকার সকালের নাশতায় ছিল দুই হাজার ৯৪৬ কিলোজুল/ক্যালরি, দুই হাজার ৫২৩ কিলোজুল দুপুরের খাবার এবং ৮৫৮ কিলোজুল রাতের খাবারে। আর ‘ডি’ খাদ্যতালিকার সকালের নাশতায় দেওয়া হয়েছিল ৮৫৮ কিলোজুল, দুপুরের খাবার দুই হাজার ৫২৩ কিলোজুল আর দুই হাজার ৯৪৬ কিলোজুল রাতের খাবারে।
ফলাফলে দেখা যায়, ‘ডি’ খাদ্যতালিকার তুলনায় ‘বি’ খাদ্যতালিকার খাবার গ্রহণের পর অংশগ্রহণকারীদের দেহে ২০ শতাংশ কম শর্করা প্রবাহিত হয়েছে এবং ইনসুলিনের মাত্রা কমেছে। সি-পেপটাইড, জিএলপি-১ বেড়েছে।
মজার বিষয় হলো, গবেষণার দুটি খাদ্যতালিকাতেই একই ধরনের ক্যালরি দেওয়া হয়েছিল। কেবল সকালের এবং রাতের ক্যালরির একটু এদিক সেদিকের ফলে এই ফলাফল দেখা যায়।