টাইটানিক ডুবে যাওয়ার ১০০ বছরেরও বেশি সময় পর হুবহু এক প্রতিকৃতি সাগরে ভাসানোর আয়োজন চলছে। ভেতরে-বাইরে মূল টাইটানিকের আদলে তৈরি করা হবে নতুন জাহাজটি। ২০১৬ সাল নাগাদ এটি পানিতে ভাসানো হবে বলে আশা করা হচ্ছে। অস্ট্রেলিয়ার ধনাঢ্য এক ব্যবসায়ী দ্বিতীয় এ টাইটানিক তৈরির পরিকল্পনা করেছেন। চীনের এক জাহাজ নির্মাতা কম্পানির সঙ্গে এরই মধ্যে এ বিষয়ে চুক্তিও হয়েছে তাঁর। তবে এখনো নির্মাণকাজ শুরু হয়নি।
অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডের আবাসন ও কয়লা ব্যবসায়ী ক্লাইভ পালমার প্রথম টাইটানিকের মতো একই চেহারার কিন্তু অত্যাধুনিক প্রযুক্তির দ্বিতীয় টাইটানিক তৈরির পরিকল্পনা করেছেন। নতুন জাহাজটি তৈরির জন্য ব্লু স্টার লাইন নামের নতুন একটি জাহাজ কম্পানি প্রতিষ্ঠা করেছেন তিনি। গতকাল শনিবার পালমারের প্রতিনিধিরা জানান, ব্লু স্টার লাইনকে সাহায্যের জন্য চীনের রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত জাহাজ নির্মাণকারী কম্পানি সিএসসি চিনলিং শিপইয়ার্ডের সঙ্গে গত এপ্রিল মাসে প্রাথমিক চুক্তিও স্বাক্ষর হয়েছে। তবে এ জাহাজ নির্মাণে কত খরচ হতে পারে, সে ব্যাপারে কোনো ধারণা দেননি তাঁরা।
পরিকল্পিত নতুন জাহাজের নাম রাখা হয়েছে ‘টাইটানিক টু’ বা দ্বিতীয় টাইটানিক। নতুন এ প্রমোদতরীর ব্যাপারে মানুষের মধ্যে এতটাই আগ্রহ তৈরি হয়েছে যে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, এশিয়া ও দক্ষিণ আমেরিকা থেকে কয়েক ডজন লোক দ্বিতীয় টাইটানিকের প্রথম যাত্রায় অংশ নেওয়ার জন্য আগাম যোগাযোগ শুরু করেছে। ১০ লাখ ডলারেরও বেশি অর্থ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন তাঁদের কয়েকজন।
১৯১২ সালের ১০ এপ্রিল বিশ্বের সবচেয়ে বড় ও সবচেয়ে বিলাসবহুল প্রমোদতরী হিসেবে উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরে যাত্রা শুরু করে টাইটানিক। পানিতে ভাসার মাত্র পাঁচ দিনের মাথায় হিমশৈলের সঙ্গে ধাক্কা লেগে সেটি ডুবে যায়। দেড় হাজারেরও বেশি মানুষ মারা যায় এ ঘটনায়।
নির্মাতারা প্রথম টাইটানিকের সঙ্গে যতটা সম্ভব মিল রাখার চেষ্টা করবেন দ্বিতীয় টাইটানিকের। প্রথমটির মতোই ৯টি তলা এবং ৮৪০টি কক্ষ রাখা হচ্ছে নতুন জাহাজে। ডিজেল-চালিত ইঞ্জিনের ধোঁয়া নির্গমণের জন্য প্রথমটির মতোই চারটি চিমনি রাখা হচ্ছে দ্বিতীয়টিতে। তবে এর ইঞ্জিন হবে আরো আধুনিক। জাহাজের নিচের অংশেও কিছু পরিবর্তন থাকছে। পর্যটকদের আকর্ষণের জন্য একটি প্রদর্শনী কক্ষ রাখা হচ্ছে। প্রথম টাইটানিকের মতো দ্বিতীয় টাইটানিক যাতে কোনো দুর্ঘটনার শিকার না হয়, তার জন্য চীনের নৌবাহিনীর একটি বহর এর সঙ্গে থাকবে। প্রথমটির মতো দ্বিতীয় টাইটানিকও প্রথম যাত্রায় লন্ডন থেকে নিউ ইয়র্কে পথে রওনা দেবে। সূত্র : ওয়াশিংটন পোস্ট।